খামের ওপরে লেখা ঠিকানাটা অস্পষ্ট হয়ে গেছে। প্যাচপ্যাচে কাদায় ঢুঁড়ে ফেলেছি শহরের যত গলি, কিন্তু দেখা পাইনি একটা লোকেরও। দুই একটা বাড়ির সামনে গিয়ে হাঁক দিলাম। কেউতো সাড়া দিলোইনা, উলটো ঠকাস শব্দে জানালা এঁটে দিলেন ক’জন। অল্প একটু ফাঁক করে উঁকিও মারছে দেখলাম কেউ কেউ।
প্যান্টের ডান পকেটটা একটু ফুলে আছে বোধহয়। আমি কিছুটা বিব্রত। ওটা কোন মারণাস্ত্র নয়, টেনিস বল সংক্রান্ত কিছু কেউ ভাবছে কিনা- কে জানে! ওটা একটা বনরুটি। বেকারিওয়ালা একটু বেশিই পুড়িয়ে ফেলেছে, মাঝখানে বোধহয় মাখনের একটা প্রলেপ (ভেজালটাই হবে) দেয়া আছে। হুড়োহুড়ি করে কেউ একজন দরজা বন্ধ করলেন, তারপর আবার সব আবার ডুবে গেল নিস্তব্ধতায়।
ডিনারের সময় পেরিয়ে গেছে অনেকক্ষণ। রুটিটা বের করবো কিনা- বুঝতে পারছিনা, সবাই যেমন ভয়ে অস্থির হয়ে আছে!
কেউ আমাকে বলে দেয়নি, তবুও ঘুরতে ঘুরতে বাড়িটা খুঁজে বের করে ফেললাম। গলির শেষ মাথাতেই, একটু পুরনো ধরনের। বিশাল সিংহ দাড়, বড়বড় থামের আড়াল থেকে বের হয়ে এসেছে বেয়ারা অশ্বত্থের চারা। সিঁড়িঘরে একটা বাতি জ্বলছিল, দরজায় কড়া নাড়তেই কেউ একজন পিট করে তা নিভিয়ে দিল।
ঘরের বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করতে পকেট থেকে বের করলাম রুটিটা। সেটা চিবুতে চিবুতে ডাকাডাকি করলাম আরো কিছুক্ষণ, তবুও কেউ দরজা খুললনা।
বৃষ্টি একসময় থেমে যায়, শেষ হয় রুটিটাও (মাখনটা আসলেই দুই নম্বুরি)। ক্লান্ত পায়ে আমি আবার ফিরে আসি। গলির মুখে আসতেই খটকা লাগলো। পিঠে অস্বস্তির একটা অনুভূতি, যেন পেছন থেকে ডাকছে অনেকগুলো কন্ঠ।
ঘুরে দাড়াতেই দেখি গলি জুড়ে পড়ে আছে অনেকগুলো হাত-পা, ছিন্ন মস্তক। আয়ত চোখের নারী মন্ডুটাতো আমার দিকে চেয়ে রইল শেষ পর্যন্ত, অপলক… আমি চিঠিটা বের করে কুচিকুচি করে ছিঁড়ে ফেলি, তারপর ছড়িয়ে দিই গলির ধ্বংসস্তুপে।
এ শহরের আলো চিরদিনের জন্য নিভে গেছে, এখানে আর কেউ কোনদিন কাউকে ভালোবাসবেনা …
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।